সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টেকনিক্যাল এনালাইসিসের অতীত ,বর্তমান ,ভবিষ্যত...



একটি শেয়ারের অতীতের কিছু Price Movement-এর উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে এর মূল্য কেমন হতে পারে, তা খুঁজে বের করার পদ্ধতিকেই বলে টেকনিক্যাল এনালাইসিস। সংক্ষেপে বলা যায়, একটি কোম্পানির শেয়ার অতীতে কোন সময় কোথায় ছিল, বর্তমানে শেয়ারের গতি কোনদিকে, ঠিক কোন অবস্থায় গিয়ে শেয়ারটি ক্রয়-বিক্রয় করা নিরাপদ আর অধিক লাভজনক ,এসব বিষয় চার্টের মাধ্যমে খুঁজে বের করাই হল টেকনিক্যাল এনালাইসিস।এনালাইসিস তিন ধরনের হয়ে থকে। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস,টেকনিক্যাল এনালাইসি্‌স, ইমোশনাল বা নিউজ এনালাইসিস।আজকে আমরা টেকনিক্যাল এনালাইসিসের অতীত বর্তমান ওভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করব।মনে রাখতে হবে, যে কোন শেয়ারে  লাভবান হতে হলে টেকনিক্যাল এনালাইসিস, ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস, ইমোশনাল বা নিউজ এনালাইসিস এই তিনদিকেই সবসময় নজর রাখতে হবে। 

টেকনিক্যাল এনালাইসিসের উৎপত্তি :

টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূলনীতিগুলো অনেক বছরের পুরোনো। ১৭শ শতাব্দীতে ডাচ্ শেয়ার মার্কেটে জোসেফ ডি লা ভেগা’ প্রথম কিছুটা টেকনিক্যাল এনালাইসিস শুরু করেন। তারপর, জাপানে ১৮শ শতকের প্রথম দিকে হোমা মুনিহিসা একজন রাইস ট্রেডার যিনি ক্যান্ডেলস্টিক টেকনিক’ (Candlestick Techniques) ব্যবহার করে টেকনিক্যাল এনালাইসিসের ধারনা দেন। যা বর্তমানে টেকনিক্যাল এনালাইসিসের অন্যতম জনপ্রিয় চার্টিং টুলস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাকে “ফাদারা অফ প্রাইজ একশন এন্ড টেকনিক্যাল এনালাইসিস “বলা হয়ে থাকে।

টেকনিক্যাল এনালাইসিসের অতীতঃ

১৯২০ এবং ১৯৩০ সালে রিচার্ড ডব্লিউ স্ক্যাবাকার বেশ কিছু বই প্রকাশ করেন, যেমন চার্লস ডউ (Charles Dow)-এর স্টক মার্কেট থিওরি’ এবং উইলিয়াম পিটার হ্যামিলটনের
প্র্যাকটিস এন্ড টেকনিক্যাল এনালাইসিস’। তবে এই বিষয়ে ১৯৪৮ সালে রবার্ট ডি এডয়ার্ডস এবং জন মিগি’র লেখা টেকনিক্যাল এনালাইসিস অফ স্টক ট্রেন্ডস’ উল্লেখযোগ্য বই।গুগলে থেকে  ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এটা বিশেষ করে ট্রেন্ড এনালাইসিস এবং চার্ট প্যাটার্ন এর উপর নির্ভর করে লেখা করা হয়েছে।অতীতে যেহেতু কম্পিউটার বিজ্ঞানের এত প্রসার ছিলনা। তাই হাতে আঁকা চার্ট এনালাইসিসের উপরেই নির্ভর করত সব কিছু। চার্লস ডউ সর্বপ্রথম পয়েন্ট এবং চার্ট এনালাইসিস শুরু করেন।ডউ থিউরি’ বলতে আসলে চার্লস ডউ-এর সমস্ত লেখাগুলোর একটা সংকলনকে বোঝায়। যা ১৯ শতকের প্রথম দিকে তিনি লেখা শুরু করেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিস নিয়ে কাজ করেছেন এমন আরও যারা পথিকৃৎ আছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লখযোগ্য হলেন রালফ নেলসন ইলিওট, উইলিয়াম ডেলবার্ট গান, রিচার্ড ইকফ।

টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বর্তমানঃ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কম্পিউটারের উপর ভিত্তি করে অনেক টেকনিক্যাল এনালাইসিসের সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। এগুলো দিয়ে টেকনিক্যাল এনালাইসিস আরো সমৃদ্ধ ও জনপ্রিয় হয়েছে এবং আগের তুলনায় অনেক নিখুঁতভাবে করা যায়।
তবে মনে রাখতে হবে, পুজিবাজারে ১০০% সঠিক বলে কোন কথা নায়। আবহাওয়া অফিস যেমন কোটি টাকার যন্ত্র ব্যবহার করেও যেমন ভুল তথ্য দেয়।তেমনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস দিয়ে আপনি একটা শেয়ারের ভবিষ্যৎ মূল্য কেমন হবে, তা সব সময় ১০০% অনুমান করে নিতে পারবেন না। 

টেকনিক্যাল এনালাইসিসের ভবিষ্যতঃ

দিন দিন টেকনিক্যাল টুলস অধুনিক থেকে আরো আধুনিকতর হচ্ছে, বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে টেকনিক্যাল টুলস ব্যবহার আরো সহজ হচ্ছে।প্রতিটি শেয়ার বাজারের উপর ভিত্তি করে কাষ্টমাইজড টেকনিক্যাল টুলস ভবিষ্যতে আসতে পারে, যেহেতু ইমোশনাল বা নিউজ এনালাইসিস শেয়ার বাজারে বড় প্রভাব রাখে তাই আটিফিশাল ইনটেলিজিন্সি দ্বারা ৯৯% সঠিক এনালাইসিস দেওয়া সম্ভব হবে না।তাই বলা যেতেই পারে ভবিষ্যতের শেয়ার বাজার ও এখনকার মতই জটিল সমীকরণে ঘেরা থাকবে।

এখন যদি আপনাদের মনে প্রশ্ন আসে কি ভাবে সৃষ্টি হয়েছিল শেয়ার বাজার আর কি ভাবেই কাজ করে এই বাজার তা হলে দেখতে পারেন আমাদের ভিডিও


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভাল কোম্পানি কত পার্সেন্ট ডিভিডেন্ড দিলে লাভ হবে?

লং ট্রাম বিনিয়োগকারীরা ভাল শেয়ার চেনার জন্য, কোম্পানীর ডেভিডেন্ড ইল্ড দেখে থাকেন।যে সমস্ত শেয়ারের  ডেভিডেন্ড ইল্ড ভাল সেই সব শেয়ার লং ট্রাম বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে।তাই আজকে আমরা  ডেভিডেন্ড   কি ? এবং  কত টাকায় কত পার্সেন্ট ডেভিডেন্ড দিলে ভাল হবে ,অর্থ্যাথ  ডেভিডেন্ড ইল্ড বাহির করার মাধ্যমে কি ভাবে ভাল শেয়ার চিনা যায়, তাই নিয়ে আলোচনা করব। ডিভিডেন্ড ( Dividend ) অর্থ লভ্যাংশ। একটি কোম্পানির তার মুনাফার যে অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করে থাকে তা-ই লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড। কখনো কখনো রিজার্ভ বা সংরক্ষিত তহবিল থেকেও লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়। লভ্যাংশ নগদ টাকা বা স্টক (শেয়ার) অথবা উভয় আকারে হতে পারে। লভ্যাংশ সাধারণত শতাংশের হিসাবে প্রকাশ করা হয়। ডিভিডেন্ড সব সময় প্রদান করা হয় ফেস ভ্যালুর উপর ভিত্তি করে। যেমন ১০% ডিভিডেন্ড দিলে প্রতি শেয়ারে ডিভিডেন্ড হবে ১ টাকা। কারন ফেস ভ্যালু ১০ টাকা এবং ১০ টাকার ১০% হচ্ছে ১ টাকা। যদিও শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা কিন্তু মার্কেটে শেয়ারের দাম ১০ টাকার থেকে বেশি বা কম হতে পারে। ধরা যাক ১০% হারে ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানি...

ক্যান্ডেলষ্টিক এর উৎপত্তির ঘটনা ও এর পিছনের সাইকোলজি

   মুনিসিহা হোমা [Munehisa Homma] ইতিহাসের সবচেয়ে সফল প্রাইজ একশন ট্রেডার।লোক্মুখে প্রচলিত আছে ,তিনি ট্রেডিংএর মাধ্যমে  ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিলেন। এখন মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কে এই  মুনিসিহা হোমা [Munehisa Homma]? তিনি জাপানের সাকাতা ইয়ামাগাতার একজন কৃষক,একজন কৃষক তার ধানের বাজার দর ওঠা নামা ধরার জন্য ক্যান্ডলষ্টিক আবিষ্কার করে। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের তিনি পথদ্রষ্টা। আজকের এই আর্টিকেল এই ক্যান্ডালষ্টিক এবং ক্যান্ডেলষ্টিক এর সাইকোলজি নিয়ে আলোচনা করা হবে। যাদের ষ্টোক মার্কেট নিয়ে আগ্রহ আছে তারা সবাই কম বেশি ক্যান্ডেলষ্টিক নিয়ে ধারণা রাখে। তাই আমরা একটু ভিন্ন ভাবে শুরু করব ,প্রথমে চিন্তা করব কি প্রেক্ষাপটে এবং কি সমস্যায় ক্যান্ডেলষ্টিক আবিষ্কার করতে হয়ে ছিল। কি তার সাইকোলজি এবং এর রহস্য ,ভেদ করা হবে এখানে। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে ধরি ,মুনিসিহা তার ধান বিক্রি করার জন্য রওনা হল এখন যেহেতু ৪০০ বছর আগের ঘটনা তাই কোন যান্ত্রিক যানবাহন আশা করা যায় না,ধরলাম গাধার পিঠে করে ধানের বস্তা নিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু গাধার পিঠে ধানের বস্তা নিয়ে যাচ্ছে তাই সঠিক সময়ে গন্তব্যে আসা সম্ভব হ...

ক্যান্ডেলষ্টিক কিভাবে কাজ করে ?

আমরা অনলাইনে চ্যাট করার সময় কম বেশি সকলেই ইমোজি ব্যবহার করে থাকি ,এই সব ইমোজি কোন ভাষা নয়, কিন্তু তার পর ও প্রতিটি ইমোজির ভিন্ন ভিন্ন  অর্থ আছে। ঠিক তেমনি ভাবে ক্যান্ডেলষ্টিক আপাত দৃষ্টিতে দেখতে সরলরেখা আকৃতির চিহ্ন হয়ে থাকলে, এই গুলো ঠিক ইমোজির মত অর্থ পূর্ণ সংকেত প্রদান করে থাকে। ক্যান্ডেলষ্টিক হচ্ছে মার্কেটের স্মাইলি, মার্কেট যদি আপনার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় ,তাহলে তা ক্যান্ডেলষ্টিক এর মাধ্যমেই তা  করা সম্ভব হবে।  উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ,ধরুন আপনি আপনার বন্ধুর কাছে  চ্যাটে এক হাজার টাকা ধার চাইলেন, উত্তরে আপনার বন্ধু 👍😀 এই ইমো দিয়ে পাঠাল তাহলে আপনি পজেটিভ হিসাবে ধরে নিবেন।ঠিক একই ক্ষেত্রে যদি 👿 এই ইমো দিত তাহলে বুঝতেন কোন না কোন ঝামেলা আছে। বন্ধু টাকা দিতে রাজি না।  ঠিক এই রকমই ক্যান্ডেলষ্টিক ও পজেটিভ হয়ে থাকে আবার আনুরূপ ভাবে নেগেটিভও হয়ে থাকে, যে ভাবে আমরা ইমো দেখে আমরা মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারি ,ঠিক তেমনি আমরা যদি আমাদের চোখকে ঠিকমত ট্রেইন করতে পারি তাহলে আমরা ক্যান্ডেলষ্টিক দেখেও মার্কেট কেমন হবে অনুধাবন করতে পারব। ক্যান্ডেলষ্টিক আপনাকে বিহাইন্ড ...