সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কিভাবে করবেন?

 ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার আগে কিছু বিষয় আপনাকে জানতে হবে। এখানে অল্প কথায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিস্তারিত ভাবে জানতে চাইলে কমেন্ট করুন , তাহলে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস নিয়ে একটা বিস্তারিত পোষ্ট করা হবে।


এখানে শুধু দরকারি বিষয় সমুহ দেয়া হল যা না জানলেই নয়ঃ

কোম্পানির নামঃ কোম্পানির পুরো নাম, যেমন গ্রামীণ ফোন লিমিটেড।

ট্রেডিং কোডঃ স্টক এক্সচেঞ্জে লিস্টেড কোম্পানির সংক্ষিপ্ত নাম বা টিকার। যেমন গ্রামীণ ফোন লিমিটেডের ট্রেডিং কোড হল "জিপি"

অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধনঃ আর্টিকেল এন্ড মেমোরেন্ডামে একটা অনুমোদিত মূলধন দিতে হয় যেমন গ্রামীণ ফোনের অনুমোদিত মূলধন বর্তমানে ৪,০০০ কোটি টাকা; পরিশোধিত মূলধন হল সর্বমোট শেয়ারের সংখ্যা কে শেয়ারের বুক/ ফেস ভেলু দিয়ে গুন, গ্রামীণ ফোনের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন ১৩৫০.৩ কোটি টাকা।

সর্ব মোট শেয়ারঃ কোম্পানির সর্বমোট শেয়ারের সংখ্যা, গ্রামীণ ফোনের সর্বমোট শেয়ার রয়েছে বর্তমানে ১,৩৫০,৩০০,০২২ টি।

সেক্টর/খাতঃ কোম্পানির কাজ অনুযায়ী খাত নির্ধারিত হয়, যেমন গ্রামীণ ফোন স্টকি এক্সচেঞ্জে টেলিকমউনিকেশন খাতের অন্তর্ভূক্ত।

কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারদের তথ্যঃ স্পন্সর ডিরেক্টর, সরকার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, বিদেশি ও সাধারণ বিনিয়োগকারী শতকরা কত শতাংশ ধারন করেন তা প্রতি একমাস অন্তর অন্তর আপডেট করা হয়।

ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারঃ সাধারণত লেনদেন যোগ্য শেয়ার যা কোন ধরণের পুর্ব ঘোষণা ছাড়া হস্তান্তর করা যায়। ডিরেক্টর ও সরকারি শেয়ার ছাড়া বাদ বাকি প্রাতিষ্ঠানিক, বিদেশি এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সন্মিলিত শেয়ারকেই ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বলা হয়।

এই সব তথ্য ডিএস ই ওয়েব সাইটে দেওয়া হয়ে থাকে ,ওয়েবসাইটে গিয়ে কোম্পানীর নামে ক্লিক করলেই এই সব তথ্য পাওয়া সম্ভব।
DSE ওয়েব সাইটে দেওয়া তথ্য


কোম্পানির আয়ঃ কোম্পানি সাধারণত প্রতি ৩ মাস অন্তর আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে থাকে এবং বছর শেষে বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাৎসরিক প্রতিবেদনে কোম্পানির মোট আয়-ব্যয় ও যাবতীয় সব তথ্য থাকে। মোট আয় থেকে মোট ব্যয় বাদ দিলে যা থাকে তাই হল নেট আয়।

শেয়ার প্রতি আয়ঃ কোম্পানির নেট আয় কে সর্বমোট শেয়ার দিয়ে ভাগ করে ফলাফল কে শেয়ার প্রতি আয় বা EPS বলা হয়। শেয়ার প্রতি আয় আবার বেসিক ও ডাইলুটেড হয়। কোম্পানি স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করলে তখন শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ডাইলুটেড আয়, বেসিক আয় থেকে খানিকটা কম হয়।

পিই রেশিওঃ কোম্পানির শেয়ারের বর্তমান দরকে শেয়ার প্রতি আয় দিয়ে ভাগফলই হচ্ছে পিই রেশিও। বাৎসরিক শেয়ার প্রতি আয় দিয়ে বর্তমান বাজার দরকে ভাগ দিলে বেসিক পিই রেশিও বের হয়। চলমান পিই রেশিও বের করার ক্ষেত্রে যা করা লাগে,

১ম প্রান্তিকের (৩ মাস) শেয়ার প্রতি আয় কে ৪ দিয়ে গুন করে বাৎসরিক শেয়ার প্রতি আয় বের করতে হবে।

অর্ধ বার্ষিক (৬ মাস) শেয়ার প্রতি আয় কে ২ দিয়ে গুন করে বাৎসরিক শেয়ার প্রতি আয় বের করতে হবে।

তৃতীয় প্রান্তিকের (৯ মাসের) শেয়ার প্রতি আয় কে প্রথমে ৩ দিয়ে ভাগ করে ৪ দিয়ে গুন করে বাতসরিকরন শেয়ার প্রতি আয় বের করতে হবে।

এছাড়া ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কোম্পানির রেভিনিউ, খরচ, এসেট, লায়াবিলিটি, ইনকাম স্টেটমেন্ট, ব্যাল্যান্স শিট, ক্যাশ ফ্লো ইত্যাদি দেখা লাগে।

প্রাথমিক ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসে যা দেখা লাগেঃ

 কোম্পানির আয় কি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত?

 কোম্পানি আসলেই কি লাভ করছে?

 কোম্পানির পজিশন তার কম্পিটিটর কোম্পানি থেকে কতটা মজবুত?

 কোম্পানি কি তার দেনা বা ব্যাংক লোন পরিশোধে সক্ষম?

 কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট কতটা সৎ নাকি ডিরেক্টরগন কোম্পানির লাভের মূল অংশ খেয়ে ফেলছে?

এ সব দেখে বাছাই/ছাটাই করার পর খাত ভিত্তিক কোম্পানির পারফর্মেন্স দেখা লাগবে। এর পর অন্যান্য তথ্য, লভ্যাংশ নিয়মিত দেয় কি না, আয় কেমন, ডিরেক্টরদের হাতে শেয়ার কেমন আছে নাকি মার্কেটে সব ছেড়ে দিচ্ছে, রিজার্ভ ও সারপ্লাস কেমন, কমপ্লায়েন্স ঠিক মত পালন করছে কি না? কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং কেমন,এ ছাড়াও আরো কিছু ছোট খাট তথ্য দরকার একটি কোম্পানীর  ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস সম্পূর্ণ করার জন্য।আপনারা যদি এই বিষয়ে আরো জানতে আগ্রহী হোন ,তাহলে কমেন্ট করুন,আমরা আরো বিস্তারিত ভাবে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস নিয়ে আলোচনা করব।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভাল কোম্পানি কত পার্সেন্ট ডিভিডেন্ড দিলে লাভ হবে?

লং ট্রাম বিনিয়োগকারীরা ভাল শেয়ার চেনার জন্য, কোম্পানীর ডেভিডেন্ড ইল্ড দেখে থাকেন।যে সমস্ত শেয়ারের  ডেভিডেন্ড ইল্ড ভাল সেই সব শেয়ার লং ট্রাম বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে।তাই আজকে আমরা  ডেভিডেন্ড   কি ? এবং  কত টাকায় কত পার্সেন্ট ডেভিডেন্ড দিলে ভাল হবে ,অর্থ্যাথ  ডেভিডেন্ড ইল্ড বাহির করার মাধ্যমে কি ভাবে ভাল শেয়ার চিনা যায়, তাই নিয়ে আলোচনা করব। ডিভিডেন্ড ( Dividend ) অর্থ লভ্যাংশ। একটি কোম্পানির তার মুনাফার যে অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করে থাকে তা-ই লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড। কখনো কখনো রিজার্ভ বা সংরক্ষিত তহবিল থেকেও লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়। লভ্যাংশ নগদ টাকা বা স্টক (শেয়ার) অথবা উভয় আকারে হতে পারে। লভ্যাংশ সাধারণত শতাংশের হিসাবে প্রকাশ করা হয়। ডিভিডেন্ড সব সময় প্রদান করা হয় ফেস ভ্যালুর উপর ভিত্তি করে। যেমন ১০% ডিভিডেন্ড দিলে প্রতি শেয়ারে ডিভিডেন্ড হবে ১ টাকা। কারন ফেস ভ্যালু ১০ টাকা এবং ১০ টাকার ১০% হচ্ছে ১ টাকা। যদিও শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা কিন্তু মার্কেটে শেয়ারের দাম ১০ টাকার থেকে বেশি বা কম হতে পারে। ধরা যাক ১০% হারে ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানি...

ক্যান্ডেলষ্টিক এর উৎপত্তির ঘটনা ও এর পিছনের সাইকোলজি

   মুনিসিহা হোমা [Munehisa Homma] ইতিহাসের সবচেয়ে সফল প্রাইজ একশন ট্রেডার।লোক্মুখে প্রচলিত আছে ,তিনি ট্রেডিংএর মাধ্যমে  ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিলেন। এখন মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কে এই  মুনিসিহা হোমা [Munehisa Homma]? তিনি জাপানের সাকাতা ইয়ামাগাতার একজন কৃষক,একজন কৃষক তার ধানের বাজার দর ওঠা নামা ধরার জন্য ক্যান্ডলষ্টিক আবিষ্কার করে। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের তিনি পথদ্রষ্টা। আজকের এই আর্টিকেল এই ক্যান্ডালষ্টিক এবং ক্যান্ডেলষ্টিক এর সাইকোলজি নিয়ে আলোচনা করা হবে। যাদের ষ্টোক মার্কেট নিয়ে আগ্রহ আছে তারা সবাই কম বেশি ক্যান্ডেলষ্টিক নিয়ে ধারণা রাখে। তাই আমরা একটু ভিন্ন ভাবে শুরু করব ,প্রথমে চিন্তা করব কি প্রেক্ষাপটে এবং কি সমস্যায় ক্যান্ডেলষ্টিক আবিষ্কার করতে হয়ে ছিল। কি তার সাইকোলজি এবং এর রহস্য ,ভেদ করা হবে এখানে। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে ধরি ,মুনিসিহা তার ধান বিক্রি করার জন্য রওনা হল এখন যেহেতু ৪০০ বছর আগের ঘটনা তাই কোন যান্ত্রিক যানবাহন আশা করা যায় না,ধরলাম গাধার পিঠে করে ধানের বস্তা নিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু গাধার পিঠে ধানের বস্তা নিয়ে যাচ্ছে তাই সঠিক সময়ে গন্তব্যে আসা সম্ভব হ...

ক্যান্ডেলষ্টিক কিভাবে কাজ করে ?

আমরা অনলাইনে চ্যাট করার সময় কম বেশি সকলেই ইমোজি ব্যবহার করে থাকি ,এই সব ইমোজি কোন ভাষা নয়, কিন্তু তার পর ও প্রতিটি ইমোজির ভিন্ন ভিন্ন  অর্থ আছে। ঠিক তেমনি ভাবে ক্যান্ডেলষ্টিক আপাত দৃষ্টিতে দেখতে সরলরেখা আকৃতির চিহ্ন হয়ে থাকলে, এই গুলো ঠিক ইমোজির মত অর্থ পূর্ণ সংকেত প্রদান করে থাকে। ক্যান্ডেলষ্টিক হচ্ছে মার্কেটের স্মাইলি, মার্কেট যদি আপনার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় ,তাহলে তা ক্যান্ডেলষ্টিক এর মাধ্যমেই তা  করা সম্ভব হবে।  উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ,ধরুন আপনি আপনার বন্ধুর কাছে  চ্যাটে এক হাজার টাকা ধার চাইলেন, উত্তরে আপনার বন্ধু 👍😀 এই ইমো দিয়ে পাঠাল তাহলে আপনি পজেটিভ হিসাবে ধরে নিবেন।ঠিক একই ক্ষেত্রে যদি 👿 এই ইমো দিত তাহলে বুঝতেন কোন না কোন ঝামেলা আছে। বন্ধু টাকা দিতে রাজি না।  ঠিক এই রকমই ক্যান্ডেলষ্টিক ও পজেটিভ হয়ে থাকে আবার আনুরূপ ভাবে নেগেটিভও হয়ে থাকে, যে ভাবে আমরা ইমো দেখে আমরা মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারি ,ঠিক তেমনি আমরা যদি আমাদের চোখকে ঠিকমত ট্রেইন করতে পারি তাহলে আমরা ক্যান্ডেলষ্টিক দেখেও মার্কেট কেমন হবে অনুধাবন করতে পারব। ক্যান্ডেলষ্টিক আপনাকে বিহাইন্ড ...